কালোজিরা, খুবই সাধারণ একটা জিনিস মনে হতে পারে। কিন্তু এর রয়েছে অসাধারণ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা। প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখের চিকিৎসা করা হচ্ছে। এজন্য সুপ্রাচীনকাল থেকে কালোজিরা খুবই বিখ্যাত একটি উপকারী খাবার।
বিকাশ অ্যাপের রিওয়ার্ড পয়েন্টের ব্যবহার
nothing phone 2 | specs coming in bd
Benco V91 | low price phone bd
ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে “কালোজিরা হচ্ছে মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের মহা ঔষধ।”এ কারণে মুসলিমদেরকে দেখা যায় তারা কালোজিরা কে খুবই মূল্যায়ন করে। এছাড়া কবিরাজ যারা রয়েছে তাদের কাছেও কালোজিরার প্রতি প্রবল আগ্রহ রয়েছে। আজকের এই লেখায় কালোজিরা খাবার বিভিন্ন উপকারিতা এবং কিভাবে খাবেন তা আলোচনা করা হবে।
কালোজিরা কি চিবিয়ে খাওয়া যাবে?
কালোজিরাকে সাধারণত বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ভর্তা করে খায়। এক্ষেত্রে তারা প্রথমে কালোজিরা টাকে সামান্য পরিমাণ ভেজে নিয়ে ভালোভাবে পানির সাথে বেটে নেয় এবং প্রয়োজনমতো মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি ব্যবহার করে। এভাবে গরম ভাতের সাথে কালোজিরা পরিবেশন করে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে।
তবে কালিজিরা আপনি যদি চান সেক্ষেত্রে ভেজে কিংবা কাঁচাতেই চিবিয়ে খেতে পারেন। ভেজে খেতে পারেন এতে করে কাচা কাচা ভাবটি থাকবে না। কাচাতেও খেতে পারেন কোন সমস্যা হবে না। কালোজিরা ছোট ছোট বিভিন্ন দানার সাহায্যে গঠিত। খাওয়ার আগে খুব ভালোভাবে ঝেড়ে পরিষ্কার করে নেবেন। পারলে একবার ধুয়ে নিয়ে শুকিয়ে তারপর খেতে পারেন। কারণ বিভিন্ন সময়ে এতে ধুলাবালি লেগে থাকতে পারে।
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা?
খালি পেটে সামান্য পরিমাণ কালোজিরা যদি সকালবেলা খেয়ে নেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনি খেয়াল করবেন। কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপের রোগী হন সেটিও নিয়ন্ত্রিত হবে। কালোজিরা আপনার হার্ট কে সুস্থ রাখবে। সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করবে। স্মৃতিশক্তির উন্নয়ন করবে।
বাচ্চারা কালোজিরা খেলে তাদের শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধি খুব দ্রুত ঘটবে। প্রসাবের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের প্রসাব পরিষ্কার হবে। তাই নিয়মিতভাবে এই সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য কালোজিরা খেতে হবে।
সকালে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
সকালবেলা শুধু নয় আপনি দিনের যেকোনো সময়ে কালোজিরা খেতে পারেন। তবে সকালে যে সকল উপায়ে খেলে আপনার উপকার তুলনামূলকভাবে বেশি দ্রুত ঘটবে তার কিছু নিয়ম লিখে দেওয়া হল।
১। কালোজিরা গুঁড়া করে নিতে পারেন। এরপর এতে প্রয়োজনমতো দুধ মিশিয়ে নিন। তারপর খেয়ে ফেলুন। এভাবে, কালোজিরা খেলে আপনার পেট খারাপের সমস্যা থাকলে তা সমাধান হয়ে যাবে।
২। আপনি যদি সর্দি আক্রান্ত রোগী হয়ে থাকেন তাহলে যে কাজটি করতে পারেন তা হল সামান্য পরিমাণ কালোজিরা একটি কাপড়ের মধ্যে পেঁচিয়ে নিন। এরপর সেটিকে হাতের তালুতে ঘষুন। সামান্য গরম করে নাকের ফুটোতে দিয়ে নাকের অন্য আরেকটি ফুটা বন্ধ করে নিশ্বাস নিন। প্রথমে খুব ঝাঁঝ মনে হবে। এবং প্রথমে একটু কষ্ট হতে পারে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখবেন আপনার সর্দির অনেক নিরাময় হয়েছে। নাক বন্ধ হয়ে থাকলে দেখবেন খুলে গেছে।
৩। কালোজিরার ভর্তা রাখতে পারেন আপনার প্রতিদিনের খাবারে। হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা যাদের রয়েছে তা দূর হয়ে যাবে।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও কিছু উপকারিতা
১। গর্ভবতী মায়েরা যারা আছে তারা কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় ভর্তা হিসেবে খেতে পারেন। এতে করে আপনার বুকের দুধ বাড়বে।
২। কালোজিরার সাথে সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে তা যে কোন সময় খেতে পারেন। এতে করে আপনাদের গোপন শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কারো কারো মতে কালোজিরা উত্তেজনা সৃষ্টিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩। কালোজিরার সাথে পেয়ারা পাতা গুড়া করে মিশিয়ে খেতে পারেন। এলার্জির সমস্যা যাদের আছে তা দূর হবে এভাবে খাওয়ার মাধ্যমে। পেয়ারা পাতাতেও রয়েছে অনেক উপকারিতা তার সাথে কালোজিরা মিশিয়ে দিলে তা আরো উপকারিতাকে বহু গুণে বাড়িয়ে দিবে।
৪। কালো জিরার সাথে পুদিনা পাতা মিশিয়ে খাওয়া যায়। রসুনের সাথেও মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনাদের সারা শরীর রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। সারা দেহের প্রতিটি অঙ্গই সতেজ থাকবে।
৫। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য সকালবেলা খালি পেটে এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা পানির সাথে মিশিয়ে খেলে গ্লুকোজের মাত্রা কম থাকবে।
৬। এক চামচ পরিমাণ কালোজিরা সাথে সামান্য পরিমাণে মাখন কিংবা যাইতুন তেল মিশিয়ে খাবেন। এতে করে আপনাদের যাদের স্পার্ম সংখ্যা কম তা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। পুরুষের গোপন শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং নারী পুরুষ উভয়ের উত্তেজনা বাড়াতে এভাবে খাওয়া যেতে পারে।
৭। এক চামচ পরিমাণ কালোজিরা তেলের সাথে এক চামচ পরিমাণ মধু দিনে দুই থেকে তিনবার খেলে আমাশয় থাকলে তা ভালো হবে।
৮। এক চামচ পরিমাণ কালোজিরা তেলের সাথে এক চামচ পরিমাণ মাখন এবং এক চামচ পরিমাণ তিলের তেল একসাথে মিশিয়ে খাবেন। পাইলসের সমস্যা যাদের আছে তারা খালি পেটে খেলে ৩-৪ সপ্তাহে উপকার পাবে।
৯। এক কাপ পরিমাণ দুধে দুই থেকে তিন চামচ কালোজিরার গুড়া মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে হার্টের বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে।
কালোজিরা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর
১। কালোজিরার অপকারিতা কি?
উত্তর: কালোজিরার কোন অপকারিতা নেই। কোন কিছুই খুব বেশি বেশি খাওয়া আমার ভালো নয়। কালোজিরা খুব বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেললে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২। কালোজিরার দাম কত টাকা বাংলাদেশে?
উত্তর: প্রতি ১০০ গ্রাম কালোজিরা বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়।
৩। কালোজিরা ভেজে খেলে কি কোন ক্ষতি হয়?
উত্তর: না কালোজিরা ভেজে খেলে এর কোন গুনাগুন নষ্ট হয় তার কোন প্রমাণ নেই। তাই ভেজে খেলে কোন সমস্যা নেই এর পুষ্টিগণের কোন পরিবর্তন হবে না।
৪। সকল বয়সের মানুষ কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ পারবে। সকল বয়সের মানুষের জন্য কালোজিরা খেতে কোন সমস্যা নেই। যাদের দাঁত নেই তারা পিষিয়ে খাবেন। কালোজিরা চিবিয়ে খাবেন এতেই উপকার চিবিয়ে না খেলে এর পুষ্টি উপাদান পরিপূর্ণভাবে দেহে শোষিত হবে না।
৫। কালোজিরার তেল কি মাথাতে ব্যবহার করা যায়?
উত্তর: যায় কোন ধরনের সমস্যা নেই। বরং মাথা ব্যথা থাকলে উপকার পাবেন।