অনেক সময় আমাদের বাজেট কম থাকায় সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কিনতে হয়। কারণ এতে অল্প টাকায় একটু ভালো ফিচারস আমরা আশা করি। কিন্তু যেকোনো মোবাইল হুট হাট করে কিনে ফেললেই হবে না। এর জন্য আছে কিছু গাইডলাইন।
আরো পড়তে পারেন :
ইংরেজি শেখার বই কি কি | ইংরেজিতে দক্ষ হতে যেগুলো লাগবে
মোবাইলের ব্যাক কভার ব্যবহার করার আগে সাবধান হন
অন্যথায় আপনাকে পরে পস্তাতে হতে পারে এবং কম দামে ভালো কিছু পাওয়ার পরিবর্তে ঠকে যেতে পারেন। এইজন্য আজকের লেখাটি পড়লে সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার আগে কি কি করবেন এবং কোন বিষয়গুলো দেখে নিবেন সেইসব জানতে পারবেন।
পুরাতন মোবাইল কিনতে করণীয়
পুরাতন মোবাইল কেনার জন্য আপনার ইচ্ছাই যথেষ্ট। যদি ইচ্ছা করে থাকেন তাহলে নিচের পয়েন্ট দুটো দেখুন কোথায় পুরাতন বা সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল পাওয়া যায়। তারও আগে বাজেট নির্ধারণ করুন। আপনি যত বেশি বাজেট নির্ধারণ করবেন ততই ভালো মোবাইল কিনতে পারবেন।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল দোকান
পুরাতন মোবাইলের কিছু নির্দিষ্ট দোকান সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। এখানে সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল বেচাকেনা হয়। এইসব দোকান হতে পারে আপনার সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার একটা উৎস।
পুরাতন ফোন কোথায় পাওয়া যায়
পুরাতন ফোন পাওয়ার আরেকটা ভালো মাধ্যম হচ্ছে Bikroy.com এর মত ওয়েবসাইট। এখানে মোবাইল সেকশনে গেলে আপনার নিজ জেলা বা বিভাগের অনেকগুলো করে বিজ্ঞাপন পাবেন।
এছাড়াও ফেসবুকের অনেক গ্রুপ ও পেজ আছে যেখানে পুরাতন ফোন বেচার বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়। যেখান থেকেই কিনুন না কেনো আগেই কখনো টাকা পেমেন্ট করবেন না। এতে করে প্রতারণার স্বীকার হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার গাইডলাইন
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কিনতে যেসব দেখবেন তার লিস্ট নিচে পয়েন্ট আকারে আলোচনা করা হলো:
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য গাইডলাইন ১
সবার প্রথমেই ফোনের হার্ডওয়্যার ঠিক আছেকিনা দেখতে হবে। মোবাইল এর চারকোনা খুঁটে খুঁটে দেখবেন যে কোনোভাবে এটি আগে খোলা হয়েছিল কিনা। আগে থেকে খোলা মোবাইলের মধ্যে দুই নাম্বার জিনিসপাতি থাকার সম্ভাবনা অনেক।
ডিসপ্লের ব্রাইটনেস ঠিক আছে কিনা এবং এর কোয়ালিটি বোঝার চেষ্টা করুন। নকল বা কমদামী ডিসপ্লের মাঝে ঝাপসা ভাব থাকে। খুব ক্লিয়ার দেখা যাচ্ছে কিনা তা যাচাই করুন।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য গাইডলাইন ২
মোবাইলের উভয় স্লট এ সিম কার্ড লাগিয়ে প্রয়োজনে কথাও বলে দেখুন সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা। মেমোরি কার্ড লাগিয়ে দেখুন কানেকশন ঠিকমত পায় কিনা। হেডফোন জ্যাক এ হেডফোন এবং চার্জিং পোর্ট এ চার্জার লাগিয়ে টেস্ট করুন চার্জ কেমন হচ্ছে। চার্জারের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী চার্জ উঠছে কিনা দেখতে হবে।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য গাইডলাইন ৩
ব্যাটারি ব্যাকআপ ঠিক আছে কিনা এটা জানার জন্য ফোনটিকে কিছুক্ষণ চালিয়ে দেখুন। ব্যাটারি ড্রেইনিং যদি অস্বাভাবিক হয় তাহলে বুঝতে হবে ব্যাটারির হেলথ ভালো নেই। এছাড়া নরমাল চালালে গরম হয় কিনা সেটাও দেখার বিষয়।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য গাইডলাইন ৪
কোনো মানুষের কাছ থেকে কিনে থাকলে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা নিবেন। এরপর সেটাকে যাচাই করে দেখবেন আসল নাকি নকল। জাতীয় পরিচয়পত্র আসল নাকি নকল টা বোঝার জন্য জাতীয় তথ্য বাতায়নে ওয়েবসাইট আছে। গুগল সার্চে পেয়ে যাবেন।
কোনো দোকান থেকে কিনলে সেক্ষেত্রে এটা লাগবে না। কারণ দোকান তো আর রাতারাতি উধাও হতে পারে না। দোকান থেকে যদি আপনাকে কোনো ওয়ারেন্টি দেয় তাহলে খুবই ভালো হয়। মোবাইল কেনার রশিদ নিবেন দোকান থেকে।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য গাইডলাইন ৫
পুরাতন ফোনে যদিও অনেক সময় বক্স আর মেমো পাওয়া যায় না, আপনি চেষ্টা করবেন সেই বক্স নেওয়ার। এরপর মোবাইলের ডায়াল অপশনে গিয়ে *#০৬# ডায়াল করবেন। যে IMEI নাম্বার দেখাচ্ছে সেটার সাথে বক্স এর টা মেলাবেন। তাহলে বোঝা যাবে মোবাইলটি আসল মালিকের কিনা। IMEI নাম্বার ম্যাচ করলে মোবাইলটি নিতে পারেন কারণ এটি কোনো চোরাই মাল না।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য গাইডলাইন ৬
মোবাইলের যাবতীয় সেন্সর গুলো চেক করুন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ফেসলক, প্রক্সিমিটি সেন্সর, লাইট সেন্সর ইত্যাদি চেক করবেন। প্লে স্টোরে অনেক অ্যাপ আছে সেন্সর চেকিং এর। যেকোনো একটি নামিয়ে সেন্সরগুলো দেখে নিবেন।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য গাইডলাইন ৭
খুব বেশি পুরাতন মডেল এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। ২ বছরের বেশি মডেলের ফোন না কেনাই ভালো হবে। কারণ বেশি পুরাতন ফোনগুলোতে নতুন আপডেটেড সফটওয়্যার অনেক সময় ভালোমত কাজ করে না। এছাড়া ফোন যত বেশি পুরাতন মডেল হবে সেটা তত বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকবে। এবং একই সাথে এর আয়ু কমে আসবে। তাই চেষ্টা করুন লেটেস্ট ভার্সন নেওয়ার।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য গাইডলাইন ৮
সবশেষে দামাদামি পার্ট। এখানে বিক্রেতার সাথে নিজের বাজেট অনুযায়ী একটা মাঝামাঝি অবস্থাতে পৌঁছাতে হবে। একটি ফোন ১ বছরের পুরাতন হলেও সেটার দাম প্রায় এক তৃতীয়াংশ হারিয়ে ফেলে আসল দামের সাথে। ২ বছর বা তার বেশি পুরাতন হলে দাম প্রায় অর্ধেক এর কিছু বেশি থাকে।
এছাড়া ভালো ব্র্যান্ডের ফোন হলে দাম একটু বেশি লাগতে পারে। ফোনের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী এর দাম অল্প এদিক সেদিক হতে পারে। আজকের এই সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ে আশা করছি আপনি সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার জন্য কি কি করবেন তার ধারণা পেয়েছেন। এইগুলো একটু যাচাই করে নিতে পারলে প্রতারণা থেকে বেঁচে যাবেন।
সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কিনতে যেসব প্রশ্ন থাকে আমাদের
১। কত দিনের বেশি পুরাতন ফোন কেনা উচিত নয়?উত্তর: ২ বছরের বেশি পুরাতন মোবাইল কেনা উচিত নয়।
২। সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনা ভালো নাকি নতুন?উত্তর: নিশ্চই নতুন ফোন। পুরাতন ফোন দেখে নিতে পারলে কম দামে সেটাও ভালো হবে।
৩। সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল এ বক্স আর চার্জার না পাওয়া গেলে কি করা প্রয়োজন?
উত্তর: সেটা না কেনাই উত্তম যদি অপরিচিত কোনো সেলারের কাছ থেকে কিনেন। এটি নকল বা চোরাই মোবাইল হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।