redmi 12 price in bangladesh | unofficial price and review 2023

redmi 12 price in bangladesh | unofficial price and review 2023

 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। শাওমি মার্কেটে নতুন একটি মোবাইল ফোন নিয়ে এসেছে। এর মডেল নাম Redmi 12। আজকের এই পোস্ট এ এই ফোন সম্পর্কে বিস্তারিত রিভিউ জানতে পারবেন।

Redmi 12 এর বাংলাদেশে প্রাইস কত ,এখানে কি কি স্পেসিফিকেশন আছে, এর পারফরমেন্স কেমন ,দাম অনুযায়ী কারা কিনবেন ও কারা কিনবেন না ইত্যাদি জানতে পুরো পোস্ট টি পড়ুন।

 

Redmi 12 in Bangladesh review

 

Redmi 12 এর দাম কত টাকা

বাংলাদেশের মার্কেটে আনঅফিসিয়াল ভাবে রেডমি টুয়েলভ মোবাইল ফোনটি দুইটি ভেরিয়েন্ট এ পাওয়া যাচ্ছে। ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি রম এর ভেরিয়েন্ট এর দাম আনঅফিসিয়াল ভাবে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা এবং 8gb র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম ভেরিয়েন্ট এর দাম আন অফিসিয়াল ভাবে প্রায় ১৯ থেকে ২০ হাজার টাকা বিভিন্ন স্থানভেদে পাওয়া যাচ্ছে।

redmi 12 এর আউটলুক ও ডিজাইন কেমন

 

রেডমি টুয়েলভ মোবাইল ফোনটি সবমিলিয়ে তিনটি কালার এ পাওয়া যায়। এর কালার গুলোর নাম হল যথাক্রমে Midnight Black,Sky Blue ও Polar Silver। প্রত্যেকটি কালারি দেখতে খুবই চমৎকার।
এই মোবাইল ফোনটি পলি কার্বনেটের তৈরি এবং এর পিছনে রয়েছে ফ্ল্যাট শেপের ডিজাইন। এই মোবাইল ফোনের সাথে প্রায় redmi note টুয়েলভ এবং রেডমি ইলেভেন এর মতোই দেখতে মিল রয়েছে। ডিসপ্লে টিতে রয়েছে একটি পাঞ্চ হোল কাট আউট।
এই মোবাইলটি থিকনেস হল ৮.১ মিলিমিটার এবং এর ওজন প্রায় ১৯৯ গ্রাম। মোবাইলটি আকার আকৃতিতে কিছুটা বড় হওয়াতে যাদের ছোট হাত রয়েছে তাদের ব্যবহার করতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। মোবাইলটির ওয়েইট ডিস্ট্রিবিউশন খুব ভালোভাবে থাকায় এক হাতেও কোন সমস্যা ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন।

redmi 12 এর ডিসপ্লে কেমন

রেডমি টুয়েলভ মোবাইল ফোন টিতে ডিসপ্লে হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ৬.৭৯ ইঞ্চি সাইজের বিশাল একটি বড় ডিসপ্লে। এই ডিসপ্লেটির রেজুলেশন ফুল এইচডি প্লাস। এবং এখানে পিক্সেল ডেন্সিটি রয়েছে ৩৯৬ পিপিআই। এটি একটি আইপিএস এলসিডি প্যানেলের ডিসপ্লে।
এছাড়া এখানে আরো রয়েছে ৯০ হার্জ রিফ্রেশ রেট এর সাপোর্ট। ডিসপ্লে রিফ্রেশ রেট প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্নভাবে 36Hz/48Hz/60Hz/90Hz পরিবর্তন হয়। যা ব্যাটারি সেভিংস এ খুবই কার্য করি। এখানে ডিসপ্লেতে পিক ব্রাইটনেস আছে ৫৫০ নিটস পর্যন্ত।

 

মোবাইলটির ডান পাশে রয়েছে ভলিউম বাটন এবং পাওয়ার বাটন। পাওয়ার বাটনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটির স্পিড ঠিক ঠাক লেগেছে আমাদের কাছে। মোবাইলটির উপরের দিকে রয়েছে 3.5 মিলিমিটারের হেডফোন জ্যাকের পোর্ট এবং একটি আই আর ব্লাস্টার সেন্সর।
বাম পাশে রয়েছে একটি হাইব্রিড সিম কার্ড ট্রে। এখানে আপনারা সর্বোচ্চ একই সাথে দুইটি সিম কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন অথবা একটি সিম কার্ড এবং একটি এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
মোবাইলটির নিচের দিকে রয়েছে প্রাইমারি মাইক্রোফোন টাইপ সি ইউ এস বি চার্জিং পোর্ট এবং স্পিকার গ্রিল। মোবাইলটি ডিসপ্লে ব্রাইটনেস আউটডোর কন্ডিশনে ভালোই বলা চলে। তবে একেবারে দিনের আলোতে দুপুর বেলা সূর্যের আলোতে সরাসরি ভাবে ব্যবহার করার সময় কিছুটা লো ব্রাইটনেস জনিত সমস্যায় আমাদেরকে পড়তে হয়েছে।

redmi 12 এর ক্যামেরা কোয়ালিটি কেমন

রেডমি টুয়েলভ এর পিছনে রয়েছে ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ। এখানে মেইন সেন্সরটি হল samsung এর jn1 সেন্সর। এই সেনসর্টির রেজুলেশন ৫০ মেগাপিক্সেল। এবং এর অ্যাপাচার এফ ওয়ান পয়েন্ট এইট।
F ২.২ অ্যাপাচার এর রয়েছে আরেকটি আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরা যার রেজুলেশন 8 মেগাপিক্সেল। এটি সনি আই এম এক্স ৩৫৫ সেন্সর। এবং সর্বশেষ ক্যামেরাটি হল টু পয়েন্ট টু অ্যাপাচার এর একটি ডেপথ সেন্সর ক্যামেরা।
ক্যামেরাগুলো দিয়ে ছবি তোলার সময় অবজেক্ট ইজিলি ফোকাস করা যাচ্ছিল। ছবিগুলো যথেষ্ট কালারফুল এবং এগুলোতে শার্পনেসও ভালো পাওয়া গিয়েছে। পোর্ট্রেট মোডে ছবি তোলার সময় এজ গুলো ভালোভাবেই ডিটেক্ট করতে পারে এবং ছবিগুলো খুব সুন্দর আসে।
ব্যাকগ্রাউন্ডে ডায়নামিক রেঞ্জ ভালো ভাবে ধরে রাখতে পারলেও পোর্ট্রেট মোডে সাদা কালার টিকে কখনো কখনো অফার এক্সপোজ করে দেয়। পেছনের ক্যামেরাটি দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করা যায় সর্বোচ্চ ১০৮০ পিক্সেল থার্টি ফ্রেম পার সেকেন্ড দিয়ে।

 

ভিডিও কোয়ালিটি দাম হিসেবে ঠিকঠাক বলা চলে। খুব বেশি ভালো এ কারণে বলতে পারছি না কারণ ভিডিও কোয়ালিটি তে স্ট্যাবালাইজেশন এর অভাব আছে। কাজ চালানোর মতো ভিডিও রেকর্ড করতে চাইলে আপনাকে শক্ত হাতে ভিডিও করতে হবে।
ফ্রন্টে ব্যবহার করা হয়েছে 2.1 অ্যাপাচারের একটি ৮ মেগাপিক্সেলের সেলফি শুটার। সেলফি শুটার টি দিনের আলোতে খুব ভালোভাবেই সেলফি গুলো তুলতে পারে। ছবিগুলোর কালার টোন প্রায় ন্যাচারাল কিন্তু হালকা কালার বুস্ট করে ফেলে যা সেলফি ক্যামেরা হিসেবে ঠিকঠাকই আছে।

redmi 12 এর পারফরমেন্স কেমন

Redmi 12 এ অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড 13। এবং এখানে ইউ আই হিসাবে থাকছে শাওমি এর নিজস্ব কাস্টম ইউ আই এম আই ইউ আই ১৪। প্রসেসর হিসাবে এখানে ব্যবহার করা হয়েছে মিডিয়াটেক হেলিও জি ৮৮।
এটি সর্বোচ্চ ২ গিগা হার্জ স্পিডে কাজ করতে পারে। এই প্রসেসরটির ট্রানজিস্টর সাইজ ১২ ন্যানো মিটার। এখানে জিপিইউ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে মালি g52 । এখানে LPDDR4x এর র্যাম রয়েছে এবং emmc 5.1 ক্যাটাগরির স্টোরেজ আছে।
রেগুলার পারফরফর্মেন্স এই মোবাইল থেকে ভালো পাওয়া গিয়েছে। দৈন্দিনের যত কাজ আপনারা স্মার্টফোন দিয়ে করি সেসব এ কোনো সমস্যা হবে না। ৮ জিবি র্যাম থাকাতে মাল্টি টাস্কিং ভালোই করা যাচ্ছিলো।
ভালো র্যাম ম্যানেজমেন্ট থাকায় অনেক গুলো অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ড এ রেখে কাজ করা যায়। গেমিং এর ক্ষেত্রে যারা টুকটাক গেমার তারা সন্তুষ্ট থাকবেন। এখানে পাবজী খেলা যায় এইচ ডি গ্রাফিক্স সেটিং এ সর্বোচ্চ হাই ফ্রেম রেট দিয়ে।
গ্রাফিক্স কমিয়ে খেললে আল্ট্রা ফ্রেম রেট পর্যন্ত সাপোর্ট করে। পাব্জি মোটামুটি ভালই খেলতে পারবেন তবে এখানে খুব বেশি বেশি খেলে থাকলে ল্যাগ বা ফ্রেম ড্রপ পাবেন। এটা খুবই স্বাভাবিক এই ধরনের ভারী গেমগুলো এই ধরনের প্রসেসর দিয়ে খুব বেস্ট কোয়ালিটির গেমিং করতে পারবেন না।
ফ্রি ফায়ার হাই গ্রাফিক্স এ ৬০ fps দিয়ে খেলা যায়। ফ্রি ফায়ারের পারফরমেন্স খুবই ভালো। কোনো সমস্যায় পড়বেন না। কল অফ ডিউটি খেলা যায় এখানে লো সেটিং এ হাই ফ্রেম রেট দিয়ে। কল অফ ডিউটি লাভার যারা আছেন তারা খুবই সন্তুষ্ট হবেন এর পারফরমেন্স এ।
অন্যান্য সকল ছোটখাটো গেম ভালো ভাবেই খেলতে পারবেন। ই-ফুটবল সর্বোচ্চ সেটিং এ খেলতে পারবেন। এবং এর ডিসপ্লে টি খুব ভালো কালার প্রোডাকশন করতে পারে জন্য গেমিং করার সময় অনেক বেশি উপভোগ করবেন।

 

redmi 12 এর ব্যাটারি কত

রেডমি ১২ মোবাইল ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে পাঁচ হাজার মিলি এম্পিয়ারের বড় ব্যাটারি। এখানে সাথেই রয়েছে 18 ওয়াট এর ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টেড চার্জার।
১৮ ওয়াট এর ফাস্ট চার্জার দিয়ে মোবাইল ফোনটিকে সম্পূর্ণ চার্জ করতে প্রায় ২ ঘন্টার কিছু বেশি সামান্য সময় লাগছিল অর্থাৎ দুই ঘন্টা 10 থেকে 15 মিনিটের মত। একবার ফোন চার্জ করার পর মোবাইল ফোনটি দিয়ে প্রায় দেড় দিনের মত বেসিক ইউজ করা যায়।
আর হেবি ইউজ করে অর্থাৎ গেম খেলে হেভি মাল্টি টাস্কিং করে ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যায় প্রায় ছয় ঘন্টার মত। বড় ডিসপ্লে থাকার পরও ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি পাওয়াতে অবশ্যই আপনি ইমপ্রেসড হবেন।

redmi 12 এর অন্যান্য কিছু বৈশিষ্ট্য

১। রেডমি টুয়েলভ এর স্পিকার পারফরমেন্স খুবই চমৎকার লেগেছে আমাদের কাছে। এর স্পিকারের সাউন্ড কোয়ালিটি বেস এবং ক্লিয়ারটি খুবই চমৎকার। প্রাইস বিবেচনায় তাই এর স্পিকারটি কে প্রশংসা করতেই হচ্ছে।
২। এই মোবাইলটিতে আপনারা সর্বোচ্চ ওয়ান টেরাবাইট পর্যন্ত এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
৩। মোবাইলটিতে আইপি ৫৩ এর সার্টিফিকেসন রয়েছে এর ফলে এখানে টুকটাক ধুলাবালি এবং টুকটাক পানির ছিটা লাগলেও কোন সমস্যা হবে না।
৪। সিকিউরিটি সেকশনে এই মোবাইল ফোনে ফেস আনলক সুবিধা রয়েছে। ফেস আনলক সিস্টেমটিও খুব ভালোভাবে কাজ করে তবে একেবারে ডার্ক কন্ডিশনে এটি কাজ করতে পারে না।
৫। রেডমি টুয়েলভ মোবাইল ফোনে আপনারা সর্বোচ্চ ভার্চুয়াল র‍্যাম ব্যবহার করতে পারবেন ৮ জিবি পর্যন্ত। ভার্চুয়াল র্যাম ব্যবহার করার মাধ্যমে এর পারফরম্যান্স সামান্য কিছুটা বাড়বে।
৬। ডিসপ্লে তে আছে ওয়াইড ভাইন এল ১ এর সাপোর্ট এর ফলে বিভিন্ন ওটিটি প্লাটফর্মে আপনারা ফুল এইচডি ভিডিও স্ট্রিম করতে পারবেন।
৭। ক্যামেরা টু এ পি আই এর প্রোপার সাপোর্ট থাকাতে এখানে আপনারা চাইলে ম্যানুয়াল ক্যামেরা অর্থাৎ জি ক্যাম ইউজ করতে পারবেন।
৮। শাওমি এখানে আই আর ব্লাস্টার সেন্সর দিয়েছে। তাই আপনি পকেটে রিমোট নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ফিলিং পাবেন। যখন যেখানে প্রয়োজন শাওমি রিমোট অ্যাপ ব্যবহার করে এসি, টিভি,প্রজেক্টর ইত্যাদি চালাতে পারেন।

redmi 12 যে কারণে কিনতে পারেন

Redmi 12 ফোনটির ডিসপ্লে টি খুবই চমৎকার এবং এর সাইজ বড় হওয়াতে যাদের বড় ডিসপ্লে প্রয়োজন তারা এই মোবাইল ফোনে সেই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। ফোনটি দেখতে অনেক স্টাইলিশ।
তাই যারা খুব ভালো একটি ডিসপ্লে কে প্রাধান্য দিয়ে ফোন কিনবেন , আপনার ভালো মানের ক্যামেরা প্রয়োজন, টুকটাক আপনি গেম খেলেন ,সুন্দর দেখতে একটা ফোন কিনতে চান তাদের জন্য এই মোবাইল।

 

redmi 12 যে কারণে হয়তো আপনি কিনবেন না

এই মোবাইলে নেই কোনো সেকেন্ডারি নয়েজ ক্যানসেলেশন মাইক্রোফোন। এখানে কোনো আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরার ব্যবহার করা হয় নি। অথচ আগের জেনারেশনের রেডমী 10 এর মধ্যে এই বিষয় গুলো ছিল।
এখানে ১৮ ওয়াটের চার্জার কে আমাদের কাছে এখন কার সময় অনুযায়ী দাম হিসাবে কম মনে হয়েছে। যারা একট্রিম গেম খেলে থাকেন তারা এর পারফরমেন্স এ সামান্য হতাশ হতে পারেন। এটি একেবারেই গেমিং সেন্ট্রিক ফোন নয়।
এখানে অন্তত ইউ এফ এস ক্যাটাগরির স্টোরেজ দেওয়া উচিত ছিল শাওমির। তাহলে ওভারঅল আরো ভালো পারফরমেন্স পাওয়া সম্ভব হতো। এই সমস্ত কারণে হয়তো আপনি redmi 12 কিনবেন না।

সর্বশেষ মন্তব্য

আজকের আর্টিকেল এ redmi 12 মোবাইল ফোনটি কে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনার কাছে আমাদের লেখাগুলোকে ভালো লাগলে আমাদের নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। এই ওয়েব সাইটে আমরা এই ধরনের লেখাকে পাবলিশ করে থাকি।
শাওমি redmi 12 আপনি কিনবেন নাকি কিনবেন না তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজে বাজারে গিয়ে ফোনটি হাতে নিয়ে দেখবেন আপনার ভালো লেগেছে কিনা। চিন্তা ভাবনা করে তারপর ডিসিসন নিন।

Hello! I’m Razwan, a dedicated Content Writer 2 years of hands-on experience.

Leave a Comment