realme c30s price in bangladesh | Realme c30s review

realme c30s price in bangladesh | Realme c30s review

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমাদের দেশের অনেক মানুষ এন্ট্রি বাজেটে একটি ভালো মানের মোবাইল ফোন কিনতে চায়। আজকের এই পুরো আর্টিকেলটি তাদের জন্য। Realme c30s মোবাইল ফোন সম্পর্কে আলোচনা করা হবে আজকে। 
Realme c30 এর আপগ্রেড ভার্সন realme c30s। এখানে নতুনত্ব কি আছে, স্পেসিফিকেশন হিসেবে কি কি দেওয়া হয়েছে এবং দাম হিসেবে কেমন হবে ইত্যাদি জানতে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। 

Realme c30s এর দাম কত 

Realme c30s দেশের বাজারে অফিশিয়াল ভাবে শুধু একটি ভেরিয়েন্ট লঞ্চ হয়েছে। তিন gb ram এবং 64gb ইন্টার্নাল মেমোরির ভেরিয়েন্ট পাওয়া যাবে ১২,৯৯৯ টাকায়। 

ভিডিও তে দেখুন realme c30s

Realme c30s এর ডিজাইন এবং লুকিং কেমন

Realme c30s সব মিলিয়ে দুইটি কালার ভেরিয়েন্টের পাওয়া যায়। একটির নাম Stripe Blue এবং অন্য কালার ভেরিয়েন্টটির নাম Stripe Black। এর বডি ফ্রেমটি এবং ব্যাকপ্যানেল টি প্লাস্টিকের তৈরি। 
মোবাইলটির উপরের দিকের কিছু নেই। নিচের দিকে পাওয়া যাবে ৩.৫ মিলিমিটারের হেডফোন জ্যাকের পোর্ট, একটি মাইক্রো ইউএসবি চার্জিং পোর্ট ,একটি স্পিকার গ্রিল এবং প্রাইমারি মাইক্রোফোন। 
মোবাইলটির বামে পাবেন সিম কার্ড ট্রে এবং এখানে সর্বোচ্চ দুইটি সিমের পাশাপাশি একই সাথে একটি এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। ডানে আছে ভলিউম বাটন এবং পাওয়ার বাটন। 
পাওয়ার বাটনটিতে সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ইমপ্লিমেন্ট করা হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের স্পিড কিছুটা কম মনে হয়েছে। টাচ করার পর হালকা পরিমাণে আমরা এনিমেশন ডিলে লক্ষ্য করেছি। 
এর পিছন দিকে লম্বা লম্বা দাগ কাটা এক ধরনের ডিজাইন পাবেন যেটা দেখতে অনেক আকর্ষণীয়। মোবাইলটির পিছনে স্কয়ার শেপের একটি ক্যামেরা হাউস দেখতে পারবেন এবং এখানে রয়েছে একটি মাত্র ক্যামেরা এবং একটি ফ্লাশ লাইট। 

Realme c30s এর থিকনেস প্রায় ৮.৫ মিলিমিটার এবং ওজন ১৮৬ গ্রাম। সিঙ্গেল হ্যান্ডেল ইউজ করার সময় খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয় নি। এর ফিঙ্গারপ্রিন্ট পজিশন ঠিক জায়গামতো আছে বলে মনে হয়েছে।

Realme c30s এর ক্যামেরা কিরকম

Realme c30s এ ব্যাক প্যানেল শুধুমাত্র একটি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে। এই ক্যামেরাটির রেজুলেশন মাত্র ৮ মেগাপিক্সেল। এবং সামনে ব্যবহার করা হয়েছে ৫ মেগাপিক্সেলের একটি সেলফি শুটার। 
পিছনের ক্যামেরাটা দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করা যায় সর্বোচ্চ ১০৮০ মেগাপিক্সেল এর। এবং সামনের ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করা যায় সর্বোচ্চ ৭২০ মেগাপিক্সেলের। ভিডিও পারফরম্যান্স এখানে খুবই এভারেজ। 
পিছন ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার সময় ফোকাস নিয়ে সামান্য সমস্যা হচ্ছিল। ম্যানুয়াল ভাবে ফোকাস করতে পারলে ফোকাস ঠিকঠাক মতো করতে পারে। তবে অটো ফোকাস দিয়ে ছবি তুললে ছবিগুলো আপনাকে অসন্তুষ্ট করতে পারে। 
রেয়ার ক্যামেরার ছবিগুলো খুবই কালারফুল এবং ভাইব্রেনট। ক্যামেরার পারফর্মেন্স আপনাদের অনেকের কাছে দাম হিসেবে এভারেজ লাগবে। সেলফি ক্যামেরার পারফরম্যান্স বলতে গেলে এখানে ছবিতে কিছুটা আপনারা শার্পনেস এর ঘাটতি পেতে পারেন রেজুলেশন কম হওয়াতে। 

Realme c30s ডিসপ্লে কি রকম

Realme c30s মোবাইল ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৬.৫ ইঞ্চি সাইজের একটি ডিসপ্লে এবং এখানে ডিসপ্লেটির রেজুলেশন এইচডি প্লাস। ডিসপ্লের পিক্সেল ডেন্সিটি ২৭০ পিপিআই। 
এর ডিসপ্লেটি একটি আইপিএস এলসিডি প্যানেলের ডিসপ্লে। ডিসপ্লেটিতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি ওয়াটার ড্রপ নচ। ডিসপ্লের চিন এবং বেজেলএরিয়া আমাদের কাছে বেশি মনে হয়েছে। 
ডিসপ্লেটির কোয়ালিটি অত্যন্ত সাধারণ মানের অন্যান্য এইচডি প্লাস ডিসপ্লের মতোই। এনট্রি বাজেটের জন্য আপনি যদি প্রথমবার কোন মোবাইল কিনে থাকেন তাহলে আপনি খুব একটা সমস্যায় পড়বেন না। কিন্তু আগে কোন ফুল এইচডি প্লাস ডিসপ্লে ব্যবহার করেছেন এমন যদি আপনার অভিজ্ঞতা হয় ,তাহলে শার্পনেস এর ঘাটতি চোখে পড়বে। 

Realme c30s এর পারফরমেন্স কি রকম

Realme c30s এ অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ১২। ইউ আই হিসেবে এখানে আছে realme ui এর গো এডিশন। 
গো এডিশন থাকার ফলে এটি একটি লাইট ইউ আই হয়েছে। লাইট ইউআই থাকাতে পারফরম্যান্স তুলনামূলকভাবে এই ফোন থেকে ভালই পাওয়া গিয়েছে ডে টু ডে কাজ করার সময়। 
এর ইউ আই টি তে বেশকিছু ব্লটওয়ার রয়েছে। হালকা একটি ইউআই তে এত বেশি প্রি ইনস্টলড অ্যাপ থাকা মোটেই ভালো কিছু নয়।আবার এর কোনো গুলোকে আপনি আনইনস্টল করে দিতে পারবেন।
গেমিং যারা করেন তাদের জন্য এই ডিভাইসটি মোটেই নয়। শুরুতেই বলা হয়েছে এই মোবাইলটি শুধু তাদের জন্যই যারা এন্ট্রি বাজেটের জন্য একটি মোবাইল ফোন কিনবেন অর্থাৎ প্রথমবার তারা স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন। 
এখানে প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে Unisoc SC9863A। এটি একটি অক্টাকোর এর প্রসেসর এবং এই প্রসেসরটির ট্রানজিস্টর সাইজ ২৮ ন্যানোমিটার ।এটি সর্বোচ্চ 1.6 গিগা হার্জ গতিতে কাজ করতে পারে। আর জিপিইউ হিসাবে আছে PowerVR IMG8322। 
এখানে টুকটাক ছোটখাটো যে গেমগুলো রয়েছে যেমন টেম্পল রান, subway surfers, লুডু ইত্যাদি গেম আপনারা খেলতে পারবেন কোন সমস্যা ছাড়াই। Pubg, free fire এর মত ভারী কেন এখানে খুব বেশি পারফরম্যান্স ড্রপ করবে। 

ফ্রী ফায়ার এখানে প্লে অ্যাবল পারফরম্যান্স দিলেও পাবজি এখানে প্লে অ্যাবল পারফরম্যান্স দিবে না। এই মোবাইল ফোনটি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা এসএমএস করা ,কথা বলা এবং ইন্টারনেট সার্ফিং করার জন্য ভালো হবে। 

Realme c30s এর ব্যাটারি কত

ব্যাটারি হিসেবে realme এখানে ব্যবহার করেছে ৫০০০ মিলি এম্পিয়ারের ব্যাটারি। এখানে বক্সের সাথেই পাওয়া যাবে দশ ওয়াটের একটি চার্জিং ব্রিক। এখানে ব্যাটারিটি লিথিয়াম পলিমার এর নন রিমুভ অ্যাবল ব্যাটারি।
এই মোবাইল থেকে সম্পূর্ণ চার্জ করতে প্রায় তিন ঘন্টার বেশি সময় লাগবে। ব্যাসিক ইউজ করে এখান থেকে আপনারা প্রায় দেড় দিনের মতো ব্যাটারি ব্যাকআপ পাবেন। 

Realme c30s যে কারণে কিনবেন

Realme c30s এর ভালো দিকগুলোর কথা বলতে গেলে এখানে আছে বড় একটি ব্যাটারি। ডিসপ্লেটি মোটামুটি ভাবে মিডিয়া কনটেন্ট দেখার মত ভাল সাপোর্ট দিবে। এর ক্যামেরাটি মোটামুটি ভাবে চলনসই। 
এবং রেগুলার পারফরম্যান্স ভালো দেওয়ার জন্য এখানে ব্যবহার করা হয়েছে গো এডিশনের ইউ আই। তাই যারা খুবই সাধারণ ব্যবহারের জন্য একটি মোবাইল ফোন কিনতে চাচ্ছেন, দেখতে সুন্দর হতে হবে ,মোটামুটি কোয়ালিটির ক্যামেরা হতে হবে এবং অনলাইনে ক্লাস করবেন কিংবা পরিবারের বয়স্ক কোনো সদস্যকে একটি মোবাইল ফোন দিতে চাচ্ছেন তারা এটিকে পছন্দ করতে পারেন। 

Realme c30s যে কারণে কিনবেন না

এই মোবাইল থেকে না কেনার অন্যতম একটি বড় কারণ হলো এর দাম। দাম হিসেবে এখানে যা specification দেওয়া হয়েছে অন্যান্য ব্র্যান্ড থেকে আমরা এর থেকে আরো অনেক বেশি কিছু পেয়ে থাকি। 
এখানে যে প্রসেসরটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি দিয়ে হেভি ইউজ করার সময়ও টুকটাক ল্যাগ দেখতে পেতে পারেন। মোবাইলটি দিয়ে গেমিং কোনোভাবেই করতে পারবেন না যদি আপনি একজন  হেভি গেমার হয়ে থাকেন। 
এখানে সেকেন্ডারি কোন নয়েজ ক্যান্সলেশন মাইক্রোফোন নেই। এখানে যে চার্জারটি দেওয়া হয়েছে সেটা দিয়ে চার্জ করতে একটু বেশি সময় লাগে তাই এখানে অন্তত 18 ওয়াট এর চার্জিং সাপোর্ট দেওয়া উচিত ছিল। 
এখানে পিছনে শুধুমাত্র একটি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে যদিওবা কোয়ালিটি এভারেজ পাবেন কিন্তু অন্যান্য একটি বা দুটি লেন্স থাকলে মেইন ক্যামেরাকে হালকা সাপোর্ট দিতে পারতো। সেলফি ক্যামেরা রেজুলেশনটি আরো ভালো হতে পারতো। 
এবং এখানে একটি টাইপ সি চার্জার অবশ্যই থাকা উচিত ছিল। মাইক্রো ইউএসবি চার্জিং পোর্ট এখন অনেক পুরাতন প্রযুক্তি। এটিকে আমরা অন্তত আর কোন ফোনে দেখতে চাই না এই সময় দাঁড়িয়ে। 

Realme c30s এর অন্যান্য কিছু বৈশিষ্ট্য

১। বক্সের সাথে আপনারা পেয়ে যাবেন প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, সিম ট্রে ইজেক্টর পিন, 10 ওয়াটের একটি চার্জার ও একটি মাইক্রো ইউএসবি চার্জিং ক্যাবল। 
২। লাউড স্পিকারটি মোটামুটি ভালই সাউন্ড দিতে পারে যা দাম হিসেবে ঠিকঠাক বলা চলে। 
৩। Realme এখানে ডিসপ্লে তে কোনো রকমের প্রটেকশন ব্যবহার করেছে কিনা, সেই রকম কোন তথ্য কোথাও পাওয়া যায়নি। তাই একটি ভালো মানের স্ক্রিন প্রটেক্টর অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। 
৪। এখানে ডুয়েল ফোরজি সাপোর্ট করে এবং ওয়াইফাই এর সিঙ্গেল ব্যান্ড ২ সাপোর্ট করে। পাশাপাশি ওটিজি এর সাপোর্টও আছে। 

৫। সিকিউরিটি হিসেবে এখানে ফেস আনলক পাবেন সাইডে মন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর পাশাপাশি। 
৬। সর্বোচ্চ ওয়ান টেরাবাইট পর্যন্ত মেমোরি কার্ড এখানে সাপোর্ট করবে। 

সর্বশেষ মন্তব্য

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার পর আশা করি আপনারা realme c30s মোবাইল ফোনটি সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। এটিকে কিনবেন কিনা সেই সিদ্ধান্তই একান্ত আপনার ব্যক্তিগত। তাই বাজারে গিয়ে অবশ্যই ভালো করে দেখে নেবেন আপনার পছন্দ হচ্ছে কিনা। 
আপনার প্রয়োজনগুলোকে এটি পূরণ করতে পারে কিনা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন আজকে এ পর্যন্তই আমাদের সাথেই থাকুন। এই রকমের আরও আর্টিকেল পাওয়ার জন্য নিয়মিত আমাদেরকে ভিজিট করুন। 

Hello! I’m Razwan, a dedicated Content Writer 2 years of hands-on experience.

Leave a Comment