vivo y27 price in bangladesh | vivo y27 review 2023

vivo y27 price in bangladesh | vivo y27 review 2023
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। ভিভো বাংলাদেশ মার্কেটে নতুন একটি মোবাইল ফোন নিয়ে এসেছে। যার মডেল নাম্বারটি y27 । আজকে এই মোবাইল ফোন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। 

 

Vivo y27 এর ভিডিও দেখুন

 

ভিভো y27 মোবাইলটি দাম অনুযায়ী কেমন হবে, এটি কাদের জন্য, এখানে স্পেসিফকেশন কি কি পাবেন, কারা কিনবেন না বা কাদের জন্য ভালো হবে না ইত্যাদি বিষয়ে জানার জন্য সম্পূর্ণ পোষ্টটি পড়ুন।

vivo y27 এর দাম কত টাকা

Vivo অফিসিয়াল ভাবে vivo y27 এর একটি মাত্র র্যাম এবং রম এর ভ্যারিয়েন্ট লঞ্চ করেছে। ৬ জিবি র্যাম এবং ১২৮ জিবি রম ভ্যারিয়েন্ট এর দাম ২২,৯৯৯ টাকা।

vivo y27 এর আউটলুক ও ডিজাইন কেমন

Vivo এই মোবাইলটির দুইটি কালার ভ্যারিয়েন্ট এ বাজারে এনেছে। একটির নাম Burgundy Black এবং আরেকটি কালার ভ্যারিয়েন্ট এর নাম Sea Blue। মোবাইলটির পিছনে বড় বড় গোল দুইটি ক্যামেরা হাউস আছে।
Vivo y27 এর পিছনে ম্যাট টেকচারের ফিনিশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে এখানে তেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট কিংবা হাতের ছাপ পড়বেনা। মোবাইলটি আকার আকৃতিতে কিছুটা বড় হওয়াতে যাদের হাত ছোট তারা ব্যবহার করার সময় সমস্যা ফেস করতে পারেন।

 

মোবাইলটির ডান পাশে রয়েছে ভলিউম বাটন এবং পাওয়ার বাটন। পাওয়ার বাটনটিতে ইমপ্লিমেন্ট করা হয়েছে সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। মোবাইলটির বাম পাশে কিছুই নেই। উপরের দিকে রয়েছে সিম ট্রে। নিচের দিকে রয়েছে টাইপ সি ইউএসবি চার্জিং পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক পোর্ট, প্রাইমারি মাইক্রোফোন এবং স্পিকার।
এখানে সিম হিসেবে আপনারা একই সাথে দুইটি সিম কার্ডের পাশাপাশি একটি এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর পজিশন আমাদের কাছে ঠিকঠাক জায়গা মতই মনে হয়েছে খুব সহজেই আঙ্গুল পৌঁছে যায়। ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর স্পিড ফাস্ট এবং একুরেট।
Vivo y27 এর থিকনেস হলো 8.1 মিলিমিটার। এবং এর ওজন প্রায় ১৯০ গ্রাম।

vivo y27 এর ডিসপ্লে কেমন

Vivo y27 এ ব্যবহার করা হয়েছে ৬.৬৪ ইঞ্চি সাইজের একটি স্ট্যান্ডার্ড ডিসপ্লে। এই ডিসপ্লেটি তে রেজুলেশনের পরিমাণ দেওয়া হয়েছে Full HD+ 1080 x 2388 pixels। এখানে পিক্সেল ডেন্সিটি রয়েছে ৩৯৫ পিপিআই।
এই মোবাইল এর ডিসপ্লেটি একটি আইপিএস এলসিডি প্যানেলের ডিসপ্লে। ডিসপ্লের মধ্যে আছে একটি ওয়াটার ড্রপ নচ। মোবাইলটির ব্যাক প্যানেল প্লাস্টিকের তৈরি। এর বডি ফ্রেমটিও প্লাস্টিকের তৈরি।

vivo y27 এর ক্যামেরা কোয়ালিটি কেমন

ভিভো y27 এর রেয়ারে রয়েছে ডুয়েল ক্যামেরা সেট আপ। এখানে মেইন সেন্সর টি হল ৫০ মেগাপিক্সেলের একটি f 1.8 অ্যাপাচার এর ক্যামেরা। অন্য ক্যামেরা সেন্সরটি হলো f ২.৪ অ্যাপাচার এর একটি ডেপথ সেন্সর।
মেইন ক্যামেরাটি দিয়ে ছবি তোলার সময় ছবিগুলো খুব ভালোভাবে ফোকাস করা যায়। এখানে ডাইনামিক রেঞ্জো ভালো কাজ করে এবং ছবিগুলোতে কালার ডিটেলস খুবই চমৎকার পাওয়া যায়। পোর্ট্রেট মোডের ছবিগুলো খুবই ভালো পাওয়া যায়।
পোট্রেট মোডে এজ ডিটেকশন করার সময় খুব বেশি ভালো ডিটেক্ট করতে না পারলেও ডায়নামিক রেঞ্জ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করার সময় খুব ভাল রকম ভাবে কাজ করতে পারে। Vivo y27 এর ক্যামেরা পারফরম্যান্স আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
পিছনের ক্যামেরাটি দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করা যায় ১০৮০ পিক্সেলে ত্রিশ ফ্রেম পার সেকেন্ড দিয়ে। ভিডিও কোয়ালিটি পারফরমেন্স মোটামুটি অ্যাভারেজ লেগেছে। মোবাইলটির সামনে ব্যবহার করা হয়েছে দুই অ্যাপাচারের একটি ৮ মেগাপিক্সেলের সেলফি শুটার।
সেলফি ক্যামেরা দিয়ে ভালো আলোতে ভালো ভালো ছবি তুলতে পারবেন। কিন্তু আলো কম হলে ছবিগুলো কে ফ্যাকাসে লাগে। সামনের ক্যামেরা দিয়ে পোর্ট্রেট মোডে ছবি তোলার সময়ও ভালো রকমের ছবি পাওয়া যায় ভালো লাইটিং কন্ডিশনে।

 

vivo y27 এর পারফরমেন্স কেমন

Vivo y27 এ অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে android 13 এবং এখানে ইউআই হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ভিভোর নিজস্ব কাস্টম ইউআই ফান্টাস ওএস থার্টিন।
প্রসেসর হিসেবে এখানে রয়েছে মিডিয়াটেক হেলিও g85। এটি একটি অকটাকোর প্রসেসর এবং এখানে ট্রানজিস্টর সাইজ রয়েছে 12 ন্যানোমিতার। এই প্রসেসরটি সর্বোচ্চ ২.০ গিগাহার্জ স্পিডে কাজ করতে পারে। এছাড়া জিপিইউ হিসেবে আছে Mali-G52 MC2।
রেগুলার পারফরম্যান্স মোবাইলটি থেকে খুবই ভালো পাওয়া গিয়েছে। এখানে র্যাম ম্যানেজমেন্ট ভালো তাই মাল্টি টাস্কিং করার সময় কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। মোবাইলটি মোটামুটি ভাবে ভালোই প্রেসার নিতে পারে।
পাবজি এখানে খেলা যায় হাই সেটিংসে সর্বোচ্চ হাই ফ্রেম রেটে। গ্রাফিক্স কমিয়ে নিলে এখানে আল্ট্রা ফ্রেম রেট পাওয়া যায়। পাবজি এখানে বেশ ভালোভাবে খেলতে পারবেন তবে অনেকক্ষণ ধরে যদি খেলেন তখন মোবাইলটি কিছুটা হিট হয়।
হিট হলে তখন পাবজি তে ফ্রেম ড্রপ এবং ল্যাগ এর দেখা পাওয়া যায়। ফ্রি ফায়ার এখানে শ্যাডো অফ করে লং টাইম বা অনেকক্ষণ ধরে ভালোভাবেই খেলা যায়। ফ্রি ফায়ার খেলার সময় মোবাইলটি তেমন একটা গরম হয় না। কল অফ ডিউটি এখানে pubg থেকে ভালোভাবে খেলতে পারবেন।
ই ফুটবল এবং আশফালট নাইন খেলার সময় আমরা পারফরম্যান্স ভালো পেয়েছি। মোবাইলটি ডিসপ্লেতে খুব ভালো কালার প্রডিউস করতে পারে ফলে গেম খেলার সময় অনেক বেশি উপভোগ করা যায়। অন্যান্য সকল ছোটখাটো গেম খুব ভালোভাবেই খেলতে পারবেন।

vivo y27 এর ব্যাটারি কত

Vivo y27 এ ব্যবহার করা হয়েছে ৫০০০ মিলি এম্পিয়ারের বড় ব্যাটারি। ব্যাটারিটি একটি লিথিয়াম পলিমার নন রিমুভেবল ব্যাটারি। পাশাপাশি এখানে চার্জার হিসেবে রয়েছে চুয়াল্লিশ ওয়াটের ফাস্ট চার্জার।
৪৪ ওয়াটের এই ফাস্ট চার্জারটি দিয়ে মোবাইল ফোনটিকে সম্পূর্ণভাবে চার্জ করতে সময় লাগে প্রায় ৪৫ মিনিট থেকে ৫০ মিনিটের মতো। একবার ফুল চার্জ করার পর মোবাইল ফোনটি ব্যাসিক ইউজ করে প্রায় একদিনের বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া গেছে।

 

আর হেবি ইউজ করে অর্থাৎ গেম খেলে ,হেভি মাল্টি টাস্টিং করে ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া গিয়েছে প্রায় পাঁচ ঘন্টার মত। চার্জ ব্যাকআপের দিক থেকে মোবাইলটি খুব ভালো ব্যাকআপ দিতে না পারলেও ফাস্ট চার্জার থাকায় খুবই দ্রুত সময় চার্জ করার মাধ্যমে তা পুসিয়ে দিতে পারে।

vivo y27 এর অন্যান্য কিছু বৈশিষ্ট্য

১। বক্সের সাথেই আপনারা মোবাইল ফোনের পাশাপাশি পেয়ে যাবেন একটি টাইপ সি ইউ এস বি চার্জিং ক্যাবল ,একটি ৪৪ ওয়াটের ফাস্ট চার্জার, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, সিম ট্রে ইজেক্টর পিন এবং একটি ব্যাক কভার।
২। Vivo y27 এর স্পিকারটি খুবই চমৎকার সাউন্ড প্রোভাইড করতে পারে। ফুল ভলিউম দিয়ে কিছু শুনলেও ডিষ্টরশন এর দেখা পাওয়া যায় না। সাউন্ডের বেইজ দাম হিসেবে এই মোবাইল ফোনটিতে খুব ভালো রকমের রয়েছে।
৩। এই মোবাইলটিতে আপনারা ভার্চুয়াল র‍্যাম ব্যবহার করতে পারবেন সর্বোচ্চ ৬ জিবি পর্যন্ত। যা মাল্টি টেস্টিং করার সময় আপনাকে কিছুটা পারফরম্যান্স বেশি দিবে।

৪। ডিসপ্লে টিতে ওয়াইড ভাইন এল ওয়ান এর সাপোর্ট রয়েছে তাই আপনারা চাইলে এখানে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ওটিটি প্লাটফর্মে ফুল এইচডি ভিডিও স্ট্রিম করতে পারবেন।

 

৫। Vivo y27 এর ক্যামেরা তে ক্যামেরা টু এপিআই এর প্রোপার সাপোর্ট রয়েছে। এর ফলে আপনারা চাইলে এখানে ম্যানুয়াল ক্যামেরা অর্থাৎ জিক্যাম ব্যবহার করতে পারবেন।
৬। এখানে যে ram ব্যবহার করা হয়েছে তা LPDDR4x এর এবং রম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ইউএফএস টু পয়েন্ট ওয়ান ক্যাটাগরি স্টোরেজ। ইউএফএস স্টোরেজ থাকাতে ডাটা ট্রান্সফার করার সময় তুলনামূলক বেশি স্পিড পাবেন।
৭। এই মোবাইলটি একটি ডুয়েল ফোরজি সাপোর্টেড মোবাইল এবং এখানে আপনারা wi-fi ২.৪ এবং ওয়াইফাই ৫ গিগা হার্জ উভয়টির সাপোর্ট পাবেন। এছাড়া আছে ব্লুটুথ 5.0।

vivo y27 যে কারণে কিনতে পারেন

Vivo y27 এর ডিসপ্লে টি আইপিএস হলেও এখানে খুব ভালো কালার প্রোডাকশন দেখা যায়। এতে করে ডিসপ্লের পারফরমেন্স সবারই ভালো লাগবে। ভিভোর ফোনগুলো দেখতে খুবই স্টাইলিশ হয় এটি এর ব্যাতিক্রম নয়। এই মোবাইলের ইউ আই টি খুবই অপটিমাইজড।
হেভি রাফ ইউজ করেও কোনো সমস্যায় পড়তে হয় নি। এখানে ফাস্ট চার্জার থাকায় খুব দ্রুত চার্জ করা যায় যা এই দামে অন্যান্য অফিসিয়াল ফোনগুলো তে নেই।
যারা অফিসিয়াল ভাবে সবথেকে বেশি ফাস্ট চার্জিং চান,টুকটাক গেমিং করেন, টুকটাক ফটোগ্রাফি করেন, দেখতে স্টাইলিশ ফোন চান তাদের জন্যই vivo y27 হতে পারে একটি সেরা ডিল।

 

vivo y27 যে কারণে হয়তো আপনি কিনবেন না

Vivo y27 এ কোনো আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরা নেই। যাদের কাছে আল্ট্রাওয়াইড ক্যামেরা গুরুত্বপূর্ণ তারা এটি কিনবেন না।
এখানে দাম অনুযায়ী একটা অ্যামোলেড প্যানেলের ডিসপ্লে দেওয়া উচিত ছিল। যদিও আইপিএস হলেও এর ডিসপ্লে টি অনেক ভালো কালারফুল। সেলফি ক্যামেরা কাজ চালানোর মত হলেও এখানে আরও বেশি রেজুলেশনের হলে আরো ভালো আউটপুট পাওয়া যেত।
এখানে রেগুলার 60 হার্জ রিফ্রেশ রেট এর ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে কিন্তু অন্যান্য প্রায় সকল ফোনে 90 বা 120 হার্জ রিফ্রেশ রেট দেখা যায়।
এখানে যেই প্রসেসর টি ব্যবহার করা হয়েছে তা সাধারণত আমরা আরো কম দামের ফোনে পেয়ে থাকি। এছাড়া এটি অনেক আগের প্রসেসর। যারা শুধু গেমিং এর ওপর থাকেন ,তারা এখানে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারবেন না।

সর্বশেষ মন্তব্য

Vivo y27 এর টুকটাক প্রায় সকল বিষয়ে আজকের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। কোনো ধরনের অসংগতি লক্ষ্য করলে আমাদের কে কমেন্ট করে জানান।
ফোনটি কেনার আগে অবশ্যই নিজে মার্কেটে গিয়ে দেখে কিনবেন। আপনার প্রয়োজন পূরণ করতে পারলেই চয়েজ করতে পারেন। আর যদি প্রয়োজন পূরণ করতে না পারে তাহলে অন্যান্য যত দিক দিয়েই একটি ফোন ভালো হোক না কেনো সেটা কেনা লসের হবে।

Hello! I’m Razwan, a dedicated Content Writer 2 years of hands-on experience.

Leave a Comment